আজও ক্লাস ও পরীক্ষা স্থগিত, নিরবতায় আচ্ছন্ন পুরো ক্যাম্পাস

প্রকাশিত: ১১:০৪ পূর্বাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১, ২০২৫

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থানীয় গ্রামবাসীর সঙ্গে সংঘর্ষের জেরে আজ সোমবারও ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ রয়েছে। তবে প্রশাসনিক ভবনে নিয়োগ পরীক্ষা ও দাপ্তরিক কাজ স্বাভাবিকভাবে চলছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৮টি বিভাগ ও ৬টি ইনস্টিটিউটে প্রায় ২৭ হাজার ৫৫০ শিক্ষার্থী পড়াশোনা করলেও সংঘর্ষের পর থেকে ক্যাম্পাস প্রায় ফাঁকা হয়ে পড়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, শিক্ষক-কর্মকর্তাদের বাস ও শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য শাটল ট্রেন নিয়মমাফিক চললেও ক্লাস ও পরীক্ষা স্থগিত রাখা হয়েছে। ভারপ্রাপ্ত পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমদ জানিয়েছেন, গতকালের পরিস্থিতি বিবেচনায় আজ ক্লাস-পরীক্ষা হয়নি, তবে আগামীকাল থেকে ক্লাস শুরু হবে কি না, শিগগিরই জানানো হবে।

শনিবার রাত সাড়ে ১২টা থেকে রোববার বিকেল ৩টা পর্যন্ত জোবরা গ্রামের বাসিন্দাদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের কয়েক দফা সংঘর্ষ হয়। এতে দুই পক্ষের অন্তত ২২০ জন আহত হন, যাঁদের মধ্যে প্রায় ২০০ জনই শিক্ষার্থী। সংঘর্ষ শুরু হয় দর্শন বিভাগের এক ছাত্রীকে মারধরের ঘটনায়। ওই ছাত্রী অভিযোগ করেন, ভাড়া বাসায় ঢোকার সময় দারোয়ান তাকে চড়-ধাক্কা ও লাথি মারেন। এরপর শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ করলে স্থানীয়দের সঙ্গে সংঘর্ষ বাঁধে।

সংঘর্ষে দুই পক্ষই রড, লাঠি, পাইপ, ইটপাটকেল ও ধারালো অস্ত্র ব্যবহার করে। এতে বহু শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হন, কয়েকজনকে আইসিইউতে ভর্তি করতে হয়। রোববার দুপুরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে হাটহাজারী উপজেলা প্রশাসন বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করে।

ঘটনার পরও পুলিশ জানিয়েছে, সোমবার সকাল পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি এবং কাউকে গ্রেপ্তারও করা হয়নি। তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম জানিয়েছেন, আহতদের চিকিৎসা ব্যয় বিশ্ববিদ্যালয় বহন করছে।

শনিবার রাতে সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে গেলেও পুরোপুরি পরিস্থিতি শান্ত হয়নি। রাতেই অন্তত ৭০ জন আহত হন, এর মধ্যে কয়েকজন ধারালো অস্ত্রে কুপিয়ে আহত হন। সংঘর্ষের পর স্থানীয়রা জোবরা এলাকা থেকে চট্টগ্রাম-হাটহাজারী মহাসড়ক অবরোধ করে দেন।